poddoja Can Be Fun For Anyone
poddoja Can Be Fun For Anyone
Blog Article
তিনি চশমা ঠিক করতে করতে বললেন,' এত অসভ্য এরা!'
১৯৮৯ সাল। সকাল সকাল রশিদ ঘটকের আগমনে হেমলতা ভীষণ বিরক্ত হোন। তিনি বার বার পইপই করে বলেছেন, ‘পদ্মর বিয়ে আমি এখুনি দেব না। পদ্মকে অনেক পড়াবো।’ তবুও রশিদউদ্দিন প্রতি সপ্তাহে, সপ্তাহে একেক পাত্রের খোঁজ নিয়ে আসবেন। মেয়ের বয়স আর কতই হলো?
তার শ্বাস-প্রশ্বাস ঘন হয়ে যায়। চোখে জল চিকচিক করছে। এমন অদ্ভুত ভালোবাসা সে দুটো দেখেনি। একজন খুন হতে চেয়েছে,আরেকজন খুন করে মুক্তি দিয়েছে। ফাহিমা কাঁদছে। পদ্মজা মিষ্টি করে হেসে বললো,’আপনি এভাবে কাঁদছেন কেন?’
পূর্ণা রুমে এসে আয়নার সামনে দাঁড়াল। নিজেকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখল। এরপর গত মাসে মেলা থেকে আনা লাল লিপস্টিক গাঢ় করে ঠোঁটে মাখে। চৌদ্দ বছরের পূর্ণার ইদানীং খুব সাজতে ইচ্ছে করে। হেমলতা সেজেগুজে স্কুলে যাওয়া পছন্দ করেন না বলে,পূর্ণা আগে লিপস্টিক মাখেনি।
আমিরের বলা কথাগুলো শুনে পদ্মজার গায়ের পশম দাঁড়িয়ে যায়। বুকে ব্যথা শুরু হয়। আমির পদ্মজার দুই হাত মুঠোয় নিয়ে চুমু দিল। তারপর বললো,’শেষবার ছুঁয়েছি আর ছুঁবো না। শপথ করছি, আর ছুঁবো না।’
বিছানার উপর কাঁথা মোড়ানো ফরিনার দূর্বল দেহটা শুয়ে আছে। বিদ্যুত নেই। ঘরের এক কোণে লণ্ঠন জ্বলছে। ফরিনার চোখ বোজা। লতিফা পায়ে পায়ে হেঁটে এসে নিঃশব্দে ফরিনার শিয়রে দাঁড়াল। ক্ষীণস্বরে ডাকলো,’খালাম্মা ঘুমাইছেন?’
মাত্র ষোল। শামসুল আলমের মেয়ের বিয়ে হয়েছে চব্বিশ বছর বয়সে। পদ্মর বিয়েও তখনি হবে। পদ্মর পছন্দমতো। হেমলতা রশিদকে দেখেও না দেখার ভান ধরলেন। রশিদ এক দলা থুথু more info ফেললেন উঠানে। এরপর হেমলতার উদ্দেশ্যে বললেন, ‘বুঝছো পদ্মর মা,এইবার যে পাত্র আনছি,এক্কেরে খাঁটি হীরা।’
পূর্ণার কিশোরী মন বুঝে যায়,পদ্মজা কীসের ব্যাথায় কেঁদেছিল। সে রাতে নানাবাড়ি ছিল বলে জানতো না।ভোরেই চলে এসেছে। নানাবাড়ি হেঁটে যেতে পাঁচ মিনিট লাগে। পূর্ণাকে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে হেমলতা বললেন, ‘তুই যা। মাথা নীচু করে যাবি মাথা নীচু করে আসবি।’
‘ বুবু…বাড়ি আন্ধার ক্যান!বাত্তি-টাত্তি জ্বালাও।’ হানিফের কণ্ঠ।
সেদিন শরৎ হেমন্তের সন্ধিক্ষনে নির্জন নিশীথে বয়ে যাওয়া হিমেল হাওয়ায় বিলের পদ্মের সঙ্গে ঘটে পূর্ণিমার চন্দ্রের প্রথম সাক্ষাৎ। হঠাৎ স্বচ্ছ জলে প্রতিবিম্বিত হয় কারো আবছায়া। কখনো তা বিশদ আভায় মোহময় করে তোলে চারপাশ — কখনো ঘোর অমাবস্যায় ছেয়ে যায় সমস্ত আকাশ!
এক মুহূর্তের জন্য মনে হয়,তার আর আমিরের সন্তান দাঁড়িয়ে আছে। পদ্মজার বুকের ভেতরটা হাহাকার
গুটি ওলটপালট হয়ে গেছে! এরেই বোধহয় বলে চোরের দশদিন,গৃহস্থের একদিন।
তোমার আহত মুখশ্রী দেখে আমার শরীরের চামড়া ঝলসে যায়। তোমার চোখের জল দেখে সমুদ্র আছড়ে পড়ে মাথার উপর। আমার মিথ্যাচার, আমার প্রতারণা তোমাকে কষ্টের ভুবনে ছুঁড়ে ফেলে। বিষাদের ছায়া ঢেকে যায় তোমার চোখ। সেই বিষাদটুকু মুছে দেয়ার অধিকার আমি হারিয়ে ফেলি। যদি পারতাম আকাশের মেঘ হয়ে তোমার কাজলকালো আঁখি ছুঁয়ে সবটুকু বিষাদ ধুয়েমুছে সাফ করে দিতাম।
নুড়ি মাথা নাড়িয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো। পদ্মজা চোখ ছোট করে বললো,' কী হলো?'
Report this page